লামা(বান্দরবান)প্রতিনিধি।।
লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের মধ্যম হায়দারনাশীর বাসিন্দা ফরিদুল আলমকে কথিত সাংবাদিক নামধারী আখ্যা দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন। প্রতিবেশি জাফর ইকবাল চৌধুরী নামের এক ভুক্তভোগী সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘ভূমিদস্যু মোঃ ফরিদুল আলমগং ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রসী কর্তৃক মরহুম মমতাজ আহমদ এর ক্রয়কৃত এবং ভোগদখলীয় বসতবাড়ি, বাগান জবর দখলের চেষ্টায় মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রায়শই হয়রানী করছে। তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে ভিতিকর পরিস্থীতি সৃষ্টি করে আসছে। শনিবার(১২ জুলাই) রাত পৌনে ১০টায় লামা প্রেসক্লাব হলরুমে সাংবাদিক সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়’
“২৮৬নং ফাঁসিয়াখালী মৌজায় (পুর্নবাস) আর/৬৮১নং হোল্ডিং এর মূল প্রজা কাছিম আলী, পিতা- আবদুর রশিদ এর নিকট হইতে ২য় চৌহদ্দি মূলে আমার পিতা মমতাজ আহামদ, পিতা- মৃত বদর উদ্দিন বিগত ১৬/০৮/২০০৫ইং তারিখে রেজিষ্ট্রার্ড বায়না নামা দলিল মূলে ০.৪০ (চল্লিশ শতক) একর ১ম ও ২য় শ্রেণীর জমি ক্রয় করেন। জমি ক্রয় করার পর তথায় বহু অর্থ ব্যয় করে বসতবাড়ি নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ ও বনজ বাগান সৃজন করে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোগ দখলে স্থীত আছেন। কিন্তু ফরিদুল আলম গং জায়গাটির উপর দুর্লোভে পড়ে। উক্ত জায়গা জোরপূর্বক জবর দখল করার জন্য বিভিন্ন সময় মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে হয়রানী করে আসছে। বিগত ২০০৪ইং সালে বিজ্ঞ সিভিল জজ আদালত, বান্দরবান পার্বত্য জেলায় তারা আমার পিতার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা মামলা দায়ের করেন। যাহার অপর মামলা নং-৪৫(ডি)/২০০৪, মিস-১২/০৯। উক্ত মামলা বিগত ০৪/০৬/২০০৭ইং। বিজ্ঞ আদালত ওই মামলা শুনানির পর খারিজ করে রায় দেন। বিগত ২০১০ইং সালে শামসুল আলম বাদী হয়ে যুগ্ম জেলা জজ আদালত, বান্দরবানে আমাদের পিতার আর/৬৮১নং হোল্ডিং এর মূল মালিক কাছিম আলী এর বিরুদ্ধে একটি চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় বিগত ১৯/০৩/২০১৫ইং তারিখে বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ, বান্দরবান মামলাটি দো-তরফাসূত্রে বিনা খরচায় খারিজ করে দেন। এর পর শামসুল আলম বিজ্ঞ জেলা জজ আদালত, বান্দরবানে দেওয়ানী আপীল-২৭/২০১৫ দায়ের করেন। ওই মামলাটিও শামসুল আলমের আবেদন মূলে খারিজ করা দেন আদালত। এতেও তারা ক্ষান্ত হননি,আমাদের পিতার ক্রয়কৃত ও ভোগদখলীয় জায়গা জবর দখল করার পায়তারা চালাতে থাকে। এ নিয়ে তাদের সাথে বিরোধ হয় এবং আমাদের বিরুদ্ধে লামা থানায় জি.আর মামলা নং- ১০৬/২০১০, লামা থানার মামলা নং- ০৩, তাং- ০৭/০৯/২০১০ হয়। ওই সময় আমার পিতাও তাদের বিরুদ্ধে মামলা নং- জি.আর ১১৪/২০১০, লামা থানার মামলা নং- ১১, তাং- ২৩/০৯/২০১০, দায়ের করেন। এরপর স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ আপোষ মিমাংসায় উপনিত হই। ওই আপোষ মিমাংসার প্রেক্ষিতে তারা আমাদের কাছ থেকে নগদ এক লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা গ্রহন করে। সেই আপোষ নামায় ৫নং শর্তাবলীতে উল্লেখ থাকে যে, তাদের মালিকানাধীন আর/১৩৭১নং হোল্ডিং এর এবং আমাদের পিতার ক্রয়কৃত ও ভোগদখলীয় আর/৬৮১নং হোল্ডিং এর জায়গা প্রত্যেকেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখলে থাকবো এবং একে অপরের জায়গা দাবী করে আর কোন বিরোধ সৃষ্টি করবো না। সেই আপোষনামাটি বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করায় উভয়পক্ষকে বিগত ২৫/০৯/২০১৮ইং তারিখে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, বান্দরবান পার্বত্য জেলা আমাদের উভয়পক্ষকে জি.আর- ১০৬/১০ এবং জি.আর- ১১৪/১০ মামলা হতে খালাস প্রদান করেন। এর পর কয়েক বছর শান্তিপুর্ন পরিবেশ ছিলো। কিন্তু আমাদের পিতা মৃত্যুবরণ করার পর বিগত ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর হতে তারা পুনরায় আমাদের জায়গার উপর পুনরায় দুর্লোভের পড়ে জবর দখল করার কু-মানসে ফরিদুল আলম আমাদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, লামায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- সি.আর-১১৪/২০২৫। মামলাটি বর্তমানে লামা থানায় তদন্তাধীন আছে। বিগত ০৯/০৬/২০২৫ইং তারিখ সকাল অনুমান টার সময় তারা আমাদের জায়গায় অনাধিকার প্রবেশ করে সীমানা ভেড়া, ঘর ভাঙ্গচুর করে একটি অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করে। তারা উক্ত সন্ত্রাসী কার্যক্রম সংগঠিত করে পালিয়ে যাওয়ার সময় আমাদেরকে প্রাণনাশের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। উক্ত ঘটনায় আমরা বিগত ১৬/০৬/২০২৫ইং তারিখ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, লামা, একটি মামলা দায়ের করি। মামলা নং- সি.আর ২৩৬/২০২৫। মামলাটি বর্তমানে লামা থানায় তদন্তাধীন রয়েছে। এই মামলা দায়ের করার পর তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে পুনরায় আমাদের জায়গা জবর দখল করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র এবং পায়তারা করিয়া আসতেছে।তারই ধারাবাহিকতায় ১২/০৭/২০২৫ইং তারিখ রাত অনুমান ২ টার সময় তারা দলবদ্ধ হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দা, কুড়াল, হাতুরী, সাবল, লোহার রড ইত্যাদি নিয়ে আমাদের জায়গায় অনুপ্রবেশ করে আমাদের পরিবারের লোকজনের নাম ধরেধরে অশ্লীল ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ কর ঘর থেকে বাহির হতে বলে। আমরা ঘর থেকে বের না হওয়ায়, সীমানা বেড়া ভাঙ্গচুর করে। ওই সময় ফরিদুল আলম, আবুল কালাম ও শামসুল আলম তাদের হাতে থাকা ধারালো দা, হাতুরী এবং সাবল দ্বারা উপর্যুপরি হামলা করে আমাদের বসত ঘরের টিনের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে জায়গা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলে। ওই সময় আমার ভাই নজরুল ইসলামকে এলোপাতারী, লাথি, কিল, ঘুষি ও শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে মারাত্মক জখম করে। ওই সময় তারা ঘরের বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙ্গচুর করে আনুমানিক এক লক্ষ টাকা ক্ষতি সাধন করে। ফরিদুল আলম ও আবুল কালাম আমার শয়নকক্ষে ঢুকে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। শামসুল আলম আমার মায়ের ঘরে ঢুকে মায়ের ব্যবহৃত আট আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন যার আনুমানিক মূল্য- আশি হাজার টাকা, গলা থেকে জোর পূর্বক ছিনিয়ে নেয়। এই তান্ডবের সময় ভোর আনুমানিক ৪টা ১০ মিনের সময় ৯৯৯ কল করে পুলিশের সহায়তায় তাদের কবল থেকে প্রানে রক্ষা পাই। এর পর পুলিশ ভোর ৬টা পর্যন্ত আমাদের বসত বাড়িতে অবস্থান করে চলে যায়।” এই ব্যাপারে লামা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামী করা হয়,
‘১। ফরিদুল আলম (৩৩), পিতা- শামশুল আলম, ২। আবুল কালাম (৩৬), পিতা- শামসুল আলম, ৩। শামসুল আলম (৫৯), পিতা- মৃত ছৈয়দ আহমদ, ৪। সাফিয়া বেগম (৫৫), স্বামী- শামসুল আলম, ৫। সানজিদা বেগম (২৩), স্বামী- ফরিদুল আলম, ৬। মফিজ আলম (৩০), পিতা- শামসুল আলম, ৭। মনির (২৮, পিতা- শামসুল আলম, ৮। আসমাউল হোসনা (২৫), স্বামী- মফিজ আলম, ৯। মো: শরিফ (৫৫), পিতা- ছৈয়দ আহাম্মদ, সর্বসাং- মধ্যম হায়দারনাশী, ৬নং ওয়ার্ড, ৩নং ফাঁসিয়াখালী ইউপি, উপজেলা- লামা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা। ১০। মো: ফোরকান (২২), পিতা- মো: শফি, ১১। জয়নাল (২৬), পিতা- সোজা মিয়া, ১২। নুর আয়েশা (২৫), স্বামী- মোঃ জয়নাল, ১৩। আয়েশা বেগম (৩৮), স্বামী- মোঃ শফি, সর্বসাং- কুমারমার ঝিরি, ৬নং ওয়ার্ড, ৩নং ফাঁসিয়াখালী ইউপি, উপজেলা- লামা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা গং।’